হার্ট অ্যাটাক: প্রতিরোধ, প্রতিকার

হার্ট অ্যাটাক মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন হিসেবে পরিচিত। এটি একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি। সাধারণত, হার্টের রক্তনালিতে ব্লক তৈরি হয়ে রক্ত চলাচল মারাত্মক অথবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়। এ সময় হার্টের মাংসপেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিভিন্ন রকম জটিলতা সৃষ্টি হয়। যেকোনো বয়সে এবং যে কেউ হার্ট অ্যাটাকের শিকার হতে পারেন। সাধারণত, বয়স্ক মানুষ ও পুরুষদের এর প্রবণতা বেশি। তবে নারীরাও বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের বাড়তি ঝুঁকিতে থাকেন। যাঁরা ধূমপান করেন, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরলজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের ঝুঁকিও বেশি। পরিবারে আগে হার্টের রক্তনালির সমস্যা বা ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ থাকলে পরিবারের অন্যদের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

বুকের মাঝখানে অথবা বাঁ পাশে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। অনেক ক্ষেত্রে বুক ভারী; বুকে চাপ; বাঁ হাত, ঘাড়, চোয়াল, বুকের পেছনে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। পেটের উপরিভাগে ব্যথাও অনেক ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ হতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ঘাম, শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা, জ্ঞান হারানো ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বুকে ব্যথা অনুভূত হলে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, দ্রুত ইসিজি ও রক্ত পরীক্ষা করে হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক চলতে হবে।}

হার্টের রক্তনালির রক্ত চলাচল পুনঃপ্রতিস্থাপন করাই এর প্রধান চিকিৎসা। যত দ্রুত চিকিৎসা প্রদান করা যায়, রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা তত বেশি ও দ্রুত হয়। এ ছাড়া, আধুনিক চিকিৎসা হলো অ্যানজিওগ্রামের মাধ্যমে হার্টের ব্লক শনাক্ত করে দ্রুত তা অপসারণ করা এবং রক্ত চলাচল পুনঃপ্রতিস্থাপন করা। বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ওষুধের মাধ্যমে রক্তজমাট ভেঙে দেওয়া হয় এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

হার্ট অ্যাটাক-পরবর্তী দুই ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে—স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি। হঠাৎ মৃত্যু বা সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ, বিভিন্ন ধরনের অ্যারিদমিয়া বা হার্টবিটের সমস্যা, হার্ট ব্লক, হার্টবিট কমে যাওয়া, একিউট হার্ট ফেইলিওর, পালমোনারি ইডেমা, কার্ডিওজনিক শক ইত্যাদি স্বল্পমেয়াদি জটিলতা। অন্যদিকে, হার্ট ফেইলিওর, অ্যারিদমিয়া, ভাল্‌ভের সমস্যা, কিডনি সমস্যা ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা।